অনলাইনে আয় করবো কিভাবে, কোথায় করবো, কেন করবো, এর ভূত ভবিষ্যত কি, ফ্রিল্যন্সিং করতে কি কি লাগে, কত আয় করতে পারবো, কোন বিষয়ে ফ্রীল্যান্সিং করবো, বর্তমান মার্কেটপ্লেসের পরিস্থিতি কেমন, আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের জন্য কতটুকু সুযোগ, ফ্রিল্যান্সার হবার র্পূব শর্ত কি, ফ্রিল্যান্সার হবার পথে সমস্যাগুলো কি কি, ইত্যাদি নানা প্রশ্ন নতুনদের মনে আসাটাই স্বাভাবিক । নতুন, এমনকি ২ – ৩ বছর ধরে চেষ্টা করেও সিদ্ধান্ত আস্থির । কিছুই ঠিক করে উঠতে পারেননি । এই পোস্টটি তাদের জন্য ।
ফ্রিল্যান্সিং কি, কয় প্রকার?
Freelancing কি, এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিতয় যাবনা। কারণ এটা আমরা জেনেই এই লেখায় এসেছি। মুক্তভাবে ঘরে বসে করা যায়, এমন সব কাজই ফ্রিল্যান্সিং পেশা । সেসব পরে বলি। ফ্রীল্যান্সিং যে দুইটি মেজোর ভাগে ভাগ করতে চাই তা হলো,
১.অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং
২.অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং।
কাজের ভাগগুলো নিয়ে পরে আলাপ করছি।
আমাদের আলাপ মূলত অনলাইন কাজগুলো নিয়ে । তার মানে এই না যে, এই কাজগুলো অনলাইনেই করা যায়। অনলাইনে কাজ যোগাড় যন্ত্র করে অফলাইনেও করা যায়। বরং ডিজিটাল কাজ বললে বেশি যুক্তিযুক্ত হতো ।
কোন বিষয়ে আউটসোর্সিং করবেন
চোখ বন্ধ করুন । ভাবুন ছোটকাল থেকে এই পর্যন্ত কোন কোন কাজ করতে ভালো লাগতো, কোন কাজ করতে ভালো লাগতো না, কোনটা করবার সুযোগ বা পথ আর নেই ।
এরপর ভাবুন কোন কোন খেলাধুলা, পড়াশোনা করতে ভালো লাগতো । আপনার কি আঁকাআঁকি পছন্দ? নাকি অংক কষতে আরাম পান ?
আপনার রসবোধ কেমন? আপনি কি লিখতে পছন্দ করেন? ইংরেজিতে আগ্রহ কেমন?
আপনার আঁকাআঁকি পছন্দ হলে গ্রাফিক ডিজাইন করতেও ভালো লাগবে । এমনকি ওয়েব ডিজাইনও ।
অংক ভালো লাগলে কোডিং/প্রোগ্রামিং ভালো লাগতে পারে । এক্ষেত্রে ওয়েব এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট । লেখালেখির বাতিক থাকলে আর্টিকেল রাইটিং বা ব্লগিং করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন । ভালোও করতে পরেবেন । গেমস খেলতে উৎসাহ থাকলে গেমস নিয়ে কাজ করতে পারবেন ।
অনলাইনে আয়ের উৎস হিসেবে জনপ্রিয় মাধ্যমগুলো হলো গ্রাফিক ডিজাইন, আর্টিকেল রাইটিং বা ব্লগিং, ভিডিও ব্লগিং, অনলাইন মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন, এনিমেশন বা মোশন গ্রাফিক্স, এস ই ও, এ্যাপ ও সফ্টওয়্যার ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, ইত্যাদি ।
একাধিক বিষয়ে দক্ষতা কি দোষের?
সবগুলো শিখতে চাইলে কোনোটাই ঠিকঠাক শিখতে পারবেন না, কথাটা যেমন আংশিক সত্য, আবার এও সত্য যে, একটা বিষয়ের সঙ্গে আরেকটি বিষয় সংশ্লিষ্ট । যেমন, এস ই ও করতে গেলে অনলাইন মার্কেটিং শিখছেন, বিনামূল্যে অনলাইন মার্কেটিং করতে গেলে আবার এস ই ও করতে হচ্ছে । এস ই ও করতে গিয়ে বা মার্কেটিিং করতে গিয়ে দেখলেন আরও প্রোফেশনাল করতে গ্রাফিক ডিজাইন জ্ঞান লাগছে । কদাচিৎ বেসিক ওয়েব
ডিজাইন জানা থাকাও দোষের কিছুনা । নিজেকে স্থির করবার জন্য প্রথমদিকে যখন যেটা করতে ভালো লাগবে সেটাই শিখবেন । এতে বাড়তি স্কিল যোগ হবে। যেসব স্কিল আপনার প্রো-জীবনে কোনোনা কোন সময়
কাজে আসবে। আবার এক্সপার্ট ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপার হতে গেলে গ্রাফিক ডিজাইন জানতে হবে ।
UI/UX ডিজাইনেও গ্রাফিক । ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে গেলে আপনাকে MS Office এর এক্সেল, ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট, পিডিএফ ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি নখদর্পণে থাকতে হবে । আবার আন্তর্জাতিক বাজারে কাজ করতে গেলে অবশ্যই ইংরেজি দক্ষতা অর্জন করতে হবে ।
আবার নির্দিষ্ট করে গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে করতে চাইলে গ্রাফিকের কোন অংশ নিয়ে কাজ করবেন সেটাও নির্ধারণ করতে হবে । প্রিন্ট ডিজাইন করতে চাইলে সেটাই ভালো করে শিখতে হবে । UI/UX ডিজাইন করতে চাইলে ওই দিকেই সময় দিতে হবে । ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রেও তাই, নির্দিষ্ট বিভাগ নির্বাচন করতে হবে ।
ব্লগিং করতে চাইলেও নির্দিষ্ট বিভাগ পছন্দ করতে হবে, সে বিষয়ে পড়াশোনা করতে হবে । শুধুমাত্র ফানি আর্টিকেল লিখতে চাইলেও যেমন পড়তে হবে, লাইফস্টাইল নিয়ে লিখতে চাইলেও জানতে হবে । লিখতে হবে ইউনিক । তারপর সময়ের পরিক্রমায় আপনা আপনি কত কি জানা হয়ে যাবে ।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ ও সেক্টর সমূহ
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং” বললাম এইজন্যই ফ্রীল্যান্সিং অনলাইনে করা যায় যেমন অফলাইনেও ফ্রীল্যান্সিং করা যায়। আজকে আমরা শুধুমাত্র অনলাইনেরটা নিয়েই আলাপ করবো। অনলাইনে ফ্রীল্যান্সিং এর জন্য কাজের ক্ষেত্র অনেক। কি কি বিষয়ের উপর ফ্রিল্যান্সিং করা যায়, সেসব উল্লেখ দেয়া হলো ।
১. বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট
২.গ্রাফিক, আর্ট ও ডিজাইন
৩. ডাটা এন্ট্রি ও লিড জেনারেশন
৪. ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপেন্ট
৫. অ্যাপ/ সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট
৬. এনিমেশন ও ভিডিও
৭. ভয়েস ট্যালেন্ট
৮. অভিনয় ও মডেলিং
৯. এসইও
১০. স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং
১১. গেইম ডেভেলপমেন্ট
১২. অনুবাদ
১৩. সাইবার সিকিউরিটি
১৪. অনলাইন ট্রেডিং
১৫. কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট
১৬. বিভিন্ন বিষয়ে কন্সাল্টেশন
আরো অনেক।
এসব সেক্টরের মধ্যেও অনেকগুলো বিভাগ আছে। কাজের অনেক ক্ষেত্র পাবেন উল্লেখিত ক্যাটেগরির ভেতরে। এই যেমন বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট তৈরি যেমন, ইউটিউব ভিডিও, ব্লগ পোস্ট, নিউজ, প্রোডাক্ট প্রেজেন্টেশন, ইত্যাদি। এই যেমন এই পোস্টটিও একটি কন্টেন্ট ।
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে হিউম্যান প্রচুর চাহিদা চিরকালই থাকবে। বর্তমানে ওয়েব সিকিউরিটি ও ব্লকচেইনে কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে, সে তুলনায় এই বিষয়ে দক্ষ ফ্রীল্যান্সার কম। এখানেও সুযোগ রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভূত ভবিষ্যত
ফ্রিল্যান্সিং এর কি কোন ভবিষ্যত আছে? পরিসংখ্যাগুলি হ্যাঁ-ই বলে।
ফ্রিল্যান্সিং একটি বিশাল ইন্ডাস্ট্রি এর বাইরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। ফ্রীল্যান্সিং এর ভবিষ্যত ঠিক কেমন তা দেখে নিন।
2023 সাল নাগাদ বৈশ্বিক গিগ অর্থনীতি $455 বিলিয়ন পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হয়েছে ।
2027 সাল নাগাদ, কর্মক্ষম জনসংখ্যার 50.9% সহ, ফ্রিল্যান্সাররা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ কর্মশক্তি তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
59% নন-ফ্রিল্যান্সাররা বলে যে, তারা ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্স কাজ করবে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ 91% ফ্রিল্যান্স কর্মী বিশ্বাস করেন যে, ফ্রিল্যান্স কাজের ভবিষ্যত ইতিবাচক।
2017 সালে 57.3 মিলিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সারদের তুলনায়, 2028 সালের মধ্যে সংখ্যা 90 মিলিয়নের উপরে বাড়বে।
ফ্রিল্যান্সিং ভবিষ্যত কেমন তা অনেকাংশে নির্ভর করবে আপনি কোন বিষয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করছেন। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং বা সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করেন তাহলে এর ভবিষ্যৎ চাহিদা আরও বাড়বে। ভবিষ্যতে
কোন বিষয়ে ফ্রীল্যান্সিং শিখবো?
বুঝতেই পারছেন, কোনো শিক্ষাতেই লস নেই । তবে বেশি এলোপাথারি না ঘুরে একটা জায়গায় স্থির হওয়াটাই জ্ঞানের কাজ । তার জন্য আপনি কিছুদিন ঘাঁটাঘাঁটি করুন । ঘাঁটাঘাঁটি কোথায় করবেন? অবশ্যই গুগলে । গুগল আপনাকে সব উত্তর দিতে প্রস্তুত । এমনকি বাংলাতেও!
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন, মোটিভেশন?
এই সূত্রটি অনুসরণ করুন –
Passion+Skill+freedom = Freelance
যেটাতে মজা পাবেন না তা না করাই ভালো । মজা তো তখনই পাবেন যখন সেই জগতে প্রবেশ করতে পারবেন, প্র্যাক্টিস করবেন । বুঝতে পারবেন । বুঝতে না পারলে কিছুই ভাল লাগবে না । স্থির হতেও পারবেন না। হতাশ হয়ে যাবেন । অন্যের কাজগুলো দেখে যখন হুবহু করতে পারবেন তখন আনন্দ পাবেন । ক্রিয়েটিভ তখনই হবেন, যখন আপনি দীর্ঘদিন অন্যকে অনুসরণ অনুকরণ করতে পারবেন । অতীতকে জেনে, তাঁকে সম্মান করে, ফলো করতে করতে করতে অন্যদেরকে অস্বীকার করতে শিখবেন । ক্রিয়েটিভিটি এমনি এমনি আসেনা । এটা চর্চার।
অল্প বিদ্যা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়াবে । কিছু না শিখেই ইন্টারভিউ বোর্ডে মুখোমুখি হতে গিয়ে জাস্ট নিরুৎসাহিত হয়ে আসবেন । এ শুধু অনলাইন আয়ের ক্ষেত্রেই না, জীবনের নানা খাতেই এমন । সিনেমা বান্তে চাইলে যেমন ভালো সিনেমা দেখতে হবে, গান গাইতে চাইলেও তেমনি ভালো গান শুনতে হবে। লেখক হতে চাইলে পড়তে হবে । কোনোকিছুই জন্ম থেকে আপনাআপনি তৈরি হয়ে আসেনা । তৈরি হতেও হয় । কো
আমি অধম তাই বলিয়া তুমি ফ্রিল্যান্সিং করিবে না কেন?
একজন সফল হয়েছে বলেই আমিও সফল হতে পারব, তেমনটি না । আবার আরেকজন সফল হয়নি বলে আমিও পারবনা, সেটাও না । আপনাকে আপনার শক্তির জায়গাটা খুঁজে বের করতে হবে । সবচে ভালো হয়, প্রথমদিকে আয়ের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে শিখতে থাকুন আর ভাবুন স্কিল ডেভেলপ করছেন । যা আপনার কর্মজীবনে বাড়তি স্কিল হিসেবেও যোগ করতে পারবেন । সিভি/রিজিউমের ওজন বাড়বে । চতুর ও বুদ্ধিমান রিক্রুটাররা এসব জানা লোকদের অগ্রাধিকার দেয়। যারা দেয়না আগামীতে দেবে।
আয়ের চিন্তা মাথা থেকে একেবারেই ঝেড়ে ফেলবেন না । এটা আপনার আত্মমোটিভেশন । এও সত্য, আয়ের মুখ দেখার
জন্য উত্তেজিত যত বেশি হবেন ততো আপনার পতিত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে । মনে রাখবেন, আপনি যেই কাজ করবেন তা ভালোভাবে না জেনে কাজের বাজারে আবেদন করবেন না। তাতে আপনার ভবিষ্যৎ মার্কেটই নষ্ট হয়। বায়াররা সংশ্লিষ্ট দেশে কাজ দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ।কোন বিষয়ে ফ্রীল্যান্সিং করবো
আমি এখানে ইতি নেতি আলোচনা করছি, যাতে সিদ্ধান্ত নিতে পর্যাপ্ত তথ্যের ইশারা পান ।মোটিভেশনাল ব্যাপারটা এমন-
আমি পারবোনা তাই বলিয়া তুমি পারিবে না কেন?
তুমি পারিবে, তাই বলিয়া আমি পারিব কেন? কোন বিষয়ে
ফ্রীল্যান্সিং ওরফে আউটসোর্সিং কিভাবে শিখবো?
ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন, কিন্তু ক্লিয়ার করে বলেন না কেউ। কাজ শিখতে গেলে নিজেই বুঝবেন আপনার ঘাটতিগুলো । ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, কোথায় শিখবো, কেন শিখবো এসব যেমন আলাপ করা হয়েছে, তার সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর ফাঁক ফোকর গুলো, সমস্যা-অন্তরায়গুলো বোঝা দরকার । এখানে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন, কি কি প্রয়োজন নাই, আবার কেন প্রয়োজন তা নিয়েও সহজ আলাপ হয়েছে।
সিদ্ধান্ত নিন ও সিদ্ধান্তহীনতা থেকে দূরে থাকুন
অনলাইনে শত ধরনের ফ্রিল্যান্স কাজ রয়েছে । যেমন, ওয়েব ভেলপমেন্ট, এনিমেশন, গ্রাফিক ডিজাইন, আর্টিকেল ও কন্টেন্ট লেখা, ডিজিটাল মার্কেটিং তথা এসইও, এসইএম, গেমস/App সহ বিবিধ কাজ রয়েছে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে । যেমন ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি । এত কাজ আর এত এত ওয়ার্কপ্লেস দেখে অনেকেই দোটানায় পড়ে যান ।
ফ্রিল্যান্সিং শেখার আগে কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্স করবো সেটা প্রথমে ঠিক করতে হবে । এর জন্য কিছুদিন সব বিভাগেই ঘুরেফিরে ঘাঁটাঘাঁটি করে যেতে হবে । যেটা ভালো লাগে এবং যে বিষয়ে চাহিদার তুলনায় প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম সেই বিষয়ে আউটসোর্সিং করতে হবে । যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং । আগামীর বিশ্ব অনলাইন মার্কেটিং নির্ভর হয়ে উঠবে । আবার এনিমেশন বা প্রোগ্রামিং এ দক্ষ লোকের সংখ্যা খুব কম । সেখানেও সুযোগ তৈরি করে নেয়া যেতে পারে ।
এইভাবে সব বিভাগেই ঘেটেঘুটে এসে ভালোলাগা, সক্ষমতার সম্ভাবনা, স্কেল ইত্যাদি যাচাই বাছাই করেই না সিদ্ধান্ত নিন, কি কাজ করবেন।
বাড়াতে হবে অনুসন্ধান দক্ষতা
একটা সমস্যায় পড়েছেন, কিন্তু গুগলকে বলতেই পারলেন না কি সমস্যা, তাহলে তো হবেনা। অনেকেই সার্চ কি-ওয়ার্ড খুঁজে পান না। কিন্তু এটা খুবই জরুরী। সময় বাঁচাতে চাইলে কি খুঁজছেন তা ক্লিয়ার করতে হবে গুগল বা ইউটিউবকে । সমস্যা ধরতে না পারা এক সমস্যা, সমস্যা ধরে তার সমাধান খুঁজতে না পারা আরেক সমস্যা । দুনিয়ার এমন কোনো সমস্যা নাই যার ব্যাখ্যা বা সমাধান গুগলে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। শুধু খুঁজতে জানতে হবে । Search Engine Result Page (SERP) সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে । ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?
তাড়াহুড়ো পরিহার ক’রে সময় ও অধ্যাবসায়
অনলাইনে আয়ের অন্যতম সমস্যা তাড়াহুড়ো । ধৈর্য ধারণ করে কাজ শিখতে হবে আগে । তাড়াহুড়ো করলে হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনাই বেশি । যারা অল্প জানেন, তাঁরা মনে করেন, অনেক কিছুই শিখেছি, এবার করার পালা । কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন ।
আবার যারা একটু বেশি জানেন, তারা আসলে জানেন যে কি পরিমাণ জানিনা । এজন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কি জানেন না তা জানার জন্য প্রচুর পড়াশোনা, করতে হবে । খাটতে হবে । মনে রাখবেন, পৃথিবীর কোনো কাজই একদিনে সাফল্য আসেনা ।
গরুর খামার করতে গেলেও অপেক্ষা করতে হবে । গরুকে খাওয়াতে হবে, পালন করতে হবে, মোটাতাজা হবে, তারপর না মাংস হবে দুধেল হলে দুধ দেবে। বিনিয়োগ করতে হবে । কাজ না শিখেই ফাইভার ও আপওয়ার্কের মত মার্প্লেকেটসে বিড করা বা আবেদন করা একটি সমস্যা । যা কেবল নাকি বাংলাদেশ থেকেই বেশি করা হয়ে থাকে । এতে আমাদের দেশের সব ফ্রীল্যান্সারদেরই ক্ষতি হয় । ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। কোনো কাজে পরিপূর্ণ ভাবে স্পেসালিস্ট হয়ে তারপর ঝাপিয়ে পড়তে হবে। কাজ নেয়ার অনেক মাধ্যম আছে ।
কখনো কখনো বিনিয়োগ করুন
অনলাইনে আয়ের কথা সবাই ভাবি, আজকে ব্যয়ের কথা শুনে ভড়কে যাবেন না। যেকোনো বিষয়ে আয় করতে চাইলে গাঁটের কিছু পয়সা খরচ করতেই হয় । তবে সব খরচের বিকল্পও আছে । যা আপনি এসব করতে গিয়েই শিখবেন ।
সময়, শ্রম, মেধা আর কিছু অর্থও ব্যয় করতে হয় । একটা মোটামুটি মানের কম্পিউটার তো লাগেই । যারা ইউটিউবার হতে চান তাঁদের লাগবে ক্যামেরা, ট্রাইপড, মাইক্রোফন, আলো ইত্যাদি ।
আবার যারা ডিজাইনার হতে চান, তাঁদের লাগবে গ্রাফিক্স কার্ড, ডিজাইন রিসোর্স, কোর্স, ইত্যাদি । আপনার কাজগুলোকে মার্কেটিং করতে বা বিক্রি করতে গেল একটা ভালো মানের এস ই ও ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট লাগবে। আবার যারা ওয়েব ডেভেলপার হতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রেও লাগবে কোর্স, সফটওয়্যার, প্লাগিন, ইন্টারনেটের বিল ইত্যাদি ।
তবে আশার কথা বেশি অর্থের প্রয়োজন হবে প্রোফেশনাল লেভেলে গিয়ে । ফ্রী বিকল্পগুলো খুঁজে বের করা জানতে হবে । তবে আগে থেকে সেসব ব্যবহার করতে পারলে বেশি উত্তম । যা আসলে তেমন খরচের মধ্যে পড়েনা । বড় যে ব্যয় সেটা হলো মেধা ও শ্রমের ব্যয় । যেমন এসইও করতে গেলে নানারকম পেইড ননপেইড টুল ব্যবহার করতে হবে । আবার সেসবের বিভিন্ন বিকল্পও আছে।
ভাষাজ্ঞান ও যোগাযোগ দক্ষতা
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক যে দুইটা ভাষা তা মোটামুটি না জানাটা একটা বড় সমস্যা । আমরা অনেকেই যুক্তি দেখাই ইংরেজি ভাষা জানিনা কিভাবে ফ্রীল্যান্সিং করব । আরে ভাই বাংলা ভাষাটাই তো ঠিকমত জানা হয়না। লিখতে গেলে কত অসঙ্গতি ধরা পড়ে । তো ইংরেজি কিভাবে করবো? ভাষার একটা ইউনিভার্সাল ঐক্য আছে। ওটা ধরতে পারলে সব ভাষাই পানির মত সহজ । সব ক্ষেত্রে অত ইংরেজি দরকার হয়না, এটাও সঠিক না। গ্লোবাল ভাষা হিসেবে ইংরেজিও জানতে হবে।
কাস্টমার বা ক্লায়েন্টের সাথে কীভাবে নেগোসিয়েশন করব, সেসবও রপ্ত করতে হবে। এই পোস্টটি পড়তে পারেনঃ
পেশাগত আলোচনা (Negotiation) দক্ষতা বাড়ানোর তিন উপায় ।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগেই আয় নিয়ে দুশ্চিন্তা , ঝেড়ে ফেলুন
আয়ের চিন্তা যেমন কর্মস্পৃহা বাড়ায়, ন্যাচারাল ক্রিয়েটিভিটি নস্যাৎ করেও দেয় । আত্মার উৎফুল্লতা কমিয়ে দেয় । মানুষকে ভীতু করে তোলে । ভীতু হলেই মানুষ অপরাধ করে ।
আয়ের চিন্তা বেশি না করে একে প্রথমে প্রেম হিসেবে না নিলে সহজাত আগ্রহ, ধৈর্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় । প্যাশনকে ঘিরেই প্রোফেশনে জাম্প করতে হবে ।
অনেকেই কাজ করা তো দূর, শেখার আগেই পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে মাথা ঘামায় । মনে রাখবেন, ফ্রীল্যান্স সাইটেই একটা একাউন্ট বা ওয়ালেট থাকবে। আয় হলে টাকা হারিয়ে যাবার ভয় নাই । দক্ষতা, দক্ষতা, দক্ষতা; এই তিন জিনিস বাড়াতেই থাকবেন।
কমে না যেন। কমে কীভাবে? চর্চা ও ব্যবহার না থাকলে।
গাইডলাইন to ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে ও বাস্তব কাজ করার জন্য এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ । কাজ শেখার কালে নানা প্রশ্ন উদয় হতে পারে, কিছু সমস্যা আছে ওয়েবে সমাধান পাওয়া দুরূহ হয়ে ওঠে । তখন একজন অভিজ্ঞের অভাববোধ তৈরি হয় । কাউকে নক করেও পাওয়া যায়না । সবাই আয়ে ব্যস্ত । যদিও অনলাইনে ঘাঁটাঘাঁটির মাধ্যমে একটা শিখতে গিয়ে আরো কিছু শিখতে পারি । একবার এতে অভ্যাস্ত হয়ে গেলে আর বিড়ম্বনা তৈরি হবেনা । নিজেই নিজের গাইডলাইন হতে পারব ।এইগুলোই প্রব্লেম । প্রথমে নির্দিষ্ট কাজগুলো সম্পর্কে আইডিয়া ও জ্ঞান অর্জন করতে হবে । যেমন এই আর্টিকেলে ডিজিটাল মার্কেটিং কি, কত ধরনের, কেন এসব নানা বিষয় সম্পর্কে টোটাল একটা ধারণা দেয়া আছে ।
শিখুন নতুন ট্রেইনারদের কাছেও
নতুন কারো কাছে যে এক্সপার্ট, কিন্তু এত সফল হয়নাই তার কাছেও অনেক কিছু শেখার আছে। সেলেব্রিটিদের কাছে শিখতে যাবেন, তারা আপনাকে এডভান্সড কিছু দেবেনা। এরা যেই শো আপ করে সেতা দ্বারা বিভ্রান্ত হবেম্ন না। এরা শুধু সাফল্যের গল্প করবে। হাস্যকর অনেক এডভাইস করবে। বিভ্রান্ত হবেন না। ব্যর্থদের কাছে শিখবার আছে। কেন তারা এখনো আলোর মুখ সেভাবে দেখেনাই, চিহ্নিত করুন। একজন এক্সপার্ট আপনাকে যতটা আন্তরিক ভাবে আপনাকে শেখাবেন, একজন নতুনের কাছে তার বেশি জানতে পারবেন।
এসইও (SEO) কি? ধাপে ধাপে এসইও শিখুন – স্মার্ট আয় করুন
পরিশেষে
কিভাবে শিখবো না শিখবো, এর জন কি কি প্রয়োজন এইসব নানামুখী প্রশ্ন আর সিদ্ধান্তহীনতা মনের ভেতর আমারো চড়ে থাকতো। সমস্যাগুলো আমি নিজেই ব্যক্তিগতভাবে ফেইস করেছি । সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলা । মনের জোর আর অনুশীলন থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো খুবই সম্ভব। যারা পৌঁছিয়েছেন তারা আমাদের মতই রক্ত-মাংসের মানুষ ।অবশ্যই এলিয়েন বা ফেরেশতা না।আরও অনেক কিছু লাগে, আস্তে আস্তে জানবেন সব । আর কি কি বুঝতে চান, জানতে চান, মন্তব্য করুন। আমার সাথে জানতে কমেন্ট, শেয়ার অথবা সাবস্ক্রাইব করুন ।
ফ্রীল্যান্সিং অনুসন্ধান দক্ষঅনুসন্ধান দক্ষতাতাকরবো
Nice