কিওয়ার্ড রিসার্চ কি সেটা জানার আগে কিওয়ার্ড কি সেটা আগে ক্লিয়ার হতে হবে । কোনো কিছু খোঁজার জন্য সার্চ ইঞ্জিনে আমরা যা লিখে সার্চ করি তাই কিওয়ার্ড । আর সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচনের জন্য রিসার্চ করাকেই কিওয়ার্ড রিসার্চ বলতে পারি। এটি এসইও র প্রথম ধাপ (এখানে এসইও গাইডটি পড়ুন এখানে ) ।
২০২২ এ এসে আসলে কিওয়ার্ড রিসার্চ কি?
ভালো কিওয়ার্ড রিসার্চ এবং ভাল কনটেন্ট মানে SEO’র 30 ভাগ কাজ শেষ । কথা সত্য, কিন্তু Kword Research ব্যাপারটাকে যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা সহজ নয়, এর জন্য ব্যাপক অনুসন্ধান এবং অনুশীলনের বিকল্প নেই। Competition ও competitor analysis থেকে শুরু করে যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় যা এর অন্তর্ভুক্ত।
বিভিন্ন টুলস বিভিন্ন রেজাল্ট দেখায়। সুতরাং সরাসরি কিওয়ার্ড টুলস/সফটওয়্যার সবসময় সঠিক ডেটা দিতে নাও পারে। যেমন উবারসাজেস্টে যেটা KD দেখাচ্ছে ৫, মানে খ্যব সহজ।
আবার Semrush এ তা দেখাচ্ছে ৭০। মানে কিওয়ার্ডটিকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করা খুব কঠিন। তাই রিসার্চ’র জন্য অর্গানিক সার্চ ও এসইও’র জন্য অর্গানিকভাবেই কিওয়ার্ড গবেষণা করতে হবে। অপরের সাথে শেয়ারিং কেয়ারিং কিওয়ার্ড রিসার্চে সফল হতে সাহায্য করবে।
কিওয়ার্ড রিসার্চ A টু Z টিউটোরিয়াল
যেমন আপনি একটা বিষয় বা প্রোডাক্ট নিয়ে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে চান। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসবে, এই পণ্যটি পাওয়ার জন্য বা পণ্যটি সম্পর্কে জানার জন্য ব্যবহারকারী সম্ভাব্য কি লিখে সার্চ করতে পারেন।
সেটা নিজেকে নিজে প্রথমে প্রশ্ন করতে পারি আমরা। এরপর অন্যকেও প্রশ্ন করলাম, “এই ভাই, অনলাইনে সিদ্ধ ডিম কিনতে চাইলে কি লিখে সার্চ দিবি প্রথমে?” সে যা উত্তর দিবে সেটাই কিওয়ারড নয়, তবে একটা ধারণার যাত্রা শুরু হলো।
আমি যেভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ শুরু করি..
কিওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে ভালো জানাশোনা হয়ে গেছে, কিন্তু কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে এবং কোথা থেকে শুরু করতে হয়, এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। আজকে আমি Keyword Research এ আমার পদ্ধতিগুলো আলোচনা করবো।
কয়েকটি পন্থায় কিওয়ার্ড রিসার্চ শুরু করতে পারি। তার মধ্যে প্রথম ও প্রধান পদ্ধতি হলো ম্যানুয়াল রিসার্চ। আমার সাইটের নিশ/টপিকের ওপরে অন্যান্য প্রতিযোগিদের ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করা।
ম্যানুয়াল কিওয়ার্ড রিসার্চ
আমার নিশ যদি হয় টেকনোলজি, আর আমি যদি গিয়ে প্রতিযোগি হিসেবে স্যামসাং বা এ্যাপল ঘাঁটাঘাঁটি করি তাহলে তো হবেনা৷ তারা আমার প্রতিযোগি নয়। স্যামসাং বা এ্যাপল এর মত আমার কোনো কোম্পানি নেই।
পূর্ব প্রস্তুতি
অর্থাৎ আগে পরিস্কার হওয়া দরকার যে, টেকনোলজির কোন শাখা নিয়ে আমি কাজ করবো। ডিজিটাল/সফটওয়্যার টেকনোলজি নাকি হার্ডওয়ার টেকনোলজি। নাকি সবকিছু। ই-কমার্স নাকি এফিলিয়েট। এর ভাষা কি বাংলা/ইংরেজি/হিন্দি নাকি বহুভাষা। স্থানীয় নাকি আন্তর্জাতিক। এইসব নানা বিষয় আশয় নিয়ে আগে ভাবতে হবে।
ধরে নিচ্ছি, আমার সাইটের নিশ বা বিষয় ‘ক্যামেরা’। আমার ওয়েবসাইট এফিলিয়েট মার্কেটিং-এর জন্য । এর ভাষা হবে ইংরেজি ও বাংলা। তো সেখানে ডিএসএলআর ক্যামেরা থেকে শুরু করে যেকোনো ক্যামেরা ও যন্ত্রাংশ নিয়ে রিভিউ বা ইনফরমেশন সহ ভালো মন্দ পোস্ট দিতে হবে।
আগে মাথা খাটান
তো ওই সাইটের জন্য আমরা একটা আর্টিকেল লিখতে চাচ্ছি ড্রোন ক্যামেরার ওপরে। আমরা নিজেরাই একটু চিন্তা করি, “ড্রোন ক্যামেরা” খুঁজতে চাইলে গুগলে কি লিখে সার্চ দিতাম। এটাকে বলে Brainstorming।
কিভাবে কিওয়ার্ড নির্বাচন করব
এভাবে খুঁজতে গিয়ে বেশিরভাগই আমরা লিখে ফেলবো Best camera drone . আরো স্পেসিফিক বুঝাতে চাইলে লিখবো, Best camera drone in 2021. আরো স্পেসিসিক করে লিখি, Best drone with camera. এইসব কিওয়ার্ডগুলো একটা একটা করে গুগলে সার্চ করে দেখতে পারি ম্যানুয়ালি। ভেতরে ঢুকে দেখতে পারি । শুধু শব্দ সংখ্যা না৷ কন্টেন্ট কোয়ালিটি কেমন, তাও দেখতে হবে । তারা কি কি কিওয়ার্ড ব্যবহার করেছে৷ তাছাড়া রিলেটেড কিছু কিওয়ার্ড দেখাবে গুগল। কিছু LSI কিওয়ার্ড দেখাবে। সেখান থেকে একটা কিওয়ার্ড নিয়ে আবার সার্চ করি। যেমনঃ

কিওয়ার্ডটি লিখে সার্চ দিলে যে রেজাল্টগুলো দেখাবে এরাই আমার এই কিওয়ার্ডের কম্পিটিটর। SERP এ ইন্সট্যান্ট দেখতে পারি এইসব সাইটের DA, DR কেমন, সার্চ ভলিউম কত, ওইসব কন্টেন্টের শব্দ সংখ্যা, ইত্যাদি জেনে নিতে পারি। এইসব ক্ষেত্রে কিছু ব্রাউজার এক্সটেনশন সাহায্য করতে পারে। যেমন Ubersuggest, mozbar, keyword surfer, ইত্যাদি।
কিওয়ার্ড কাঠিন্য (Keyword Difficulty)
কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি বিচার করা হল কিওয়ার্ড রিসার্চ এর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই ধাপে আমরা দেখব শুধু কোন কিওয়ার্ডের কত সার্চ ভলিউম সেটা দেখবনা, সেটাকে র্যাংক করানো কতখানি ডিফিকাল্টি তা বুঝতে চেষ্টা করা । সার্চ ভলিউম আমরা সহজেই জানতে পারলেও এসইও ডিফিকাল্টি একটু সময় সাপেক্ষও বটে।
কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (Keyword Difficulty) বা SEO Difficulty বোঝার জন্য যে কয়টি বিষয় সবসময় খেয়াল রাখতে হবেঃ
১. কম্পিটিটর বুঝতে হবে, কে আপনার কম্পিটিটর কে আপনার কম্পিটিটর নয় সেটা না বুঝলে কি করে তাদের সঙ্গে কম্পিটিশন করব?
২. রাঙ্কিং এ থাকা ওয়েবসাইট পেজগুলো কিওয়ার্ডের সাথে কতটুকু প্রাসঙ্গিক সেটাও কেডি ফ্যাক্ট। অপ্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট র্যাংক করে থাকলে সেইখানে কিওয়ার্ড র্যাঙ্ক করা পসিবল।
৩.আপনার টার্গেট কিওয়ার্ডের আন্ডারে যেসব সাইট র্যাংক করেছে সেগুলোর অথরিটি কত? যদি সবগুলো লিংকের DA/DR গড়ে ৫০ এর ওপরে হয়, সেখানে র্যাংক করা কঠিন।
৪. কম্পিটিটরের কনটেন্ট মান সম্মত না হলে র্যাংক করা সম্ভব। শব্দ সংখ্যা, সাইটের ডিজাইন, ইউজ্যাবিলিটি, স্পিড, ইত্যাদি মিলে কন্টেন্টের কোয়ালিটি।
৫. সোশ্যাল মিডিয়া যেমন Quora, Facebook, pinterest, Youtube, ব্লগস্পট এ ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া র্যাংক করেছে কিনা সেটাও কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি নির্ধারনে ভাবতে হবে। এই ধরনের ওয়েবসাইট র্যাংক করে থাকলে বুঝতে হবে র্যাংক করা সহজ।
কখনো কখনো এই ধরনের সোশ্যাল সাইটএর কন্টেন্ট ভালো হলেও র্যাংক হয়। সেটাও খেয়াল করতে হবে।
৬. কম্পিটিটর কতগুলো ব্যাকলিংক করেছে, সেটাও র্যাংক ফ্যাক্টর। তবে সেই সব লিংক এর কোয়ালিটি কতটুকু, সেটাও র্যাংকিং ফ্যাক্টর।

কীভাবে Keyword Research করতে হয় তা জানলেন, কিন্তু কিওয়ার্ডগুলোর র্যাংকিং মনিটর করাটা আরো গুরুত্বপূর্ণ। কিওয়ার্ড Ranking মনিটরিং এর জন্য Google search Console একদম ফ্রী। তবে আরেকটি ফ্রী টুল Seobility. এটার মাধ্যমে আপনার প্রতিযোগীদের র্যাংকিংও দেখতে পারবেন।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফ্রী SEO tools সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে।
আমাদের এই কী-ওয়ার্ড রিসার্চ ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল আপনার কিওয়ার্ড রিসার্চ দক্ষতা বৃদ্ধিতে নানাভাবে সহযোগিতা করতে পারে। কিওয়ার্ড বিষয়ক যেকোন প্রশ্ন, উত্তর, সমাধান ও আলোচনার জন্য জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপ Keyword research Association এ।
Most effective tutorial for learning Keyword research.
ধন্যবাদ অসংখ্য ।